Skip to main content
 

আমাদের কথা

জেলা ও দায়রা জজ আদালত

চাঁদপুর

জেলা পরিচিতিঃ

চাঁদপুর জেলা বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বিভাগে অবস্থিত একটি জেলা।  ১৯৮৪ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এটি কুমিল্লা জেলার একটি অংশ ছিলমেঘনা, ডাকাতিয়া, ধনাগোদা নদীর কোল জুড়ে ১৭০৪.০৬ বর্গ কি.মি. আয়তনের ঘন সবুজ ভূ-খন্ডের নাম চাঁদপুর। বার ভূঁইয়াদের আমলে চাঁদপুর অঞ্চল বিক্রমপুরের জমিদার চাঁদরায়ের দখলে ছিল। এ অঞ্চলে তিনি একটি শাসনকেন্দ্র স্থাপন করেছিলেন। ইতিহাসবিদ জে. এম. সেনগুপ্তের মতে, চাঁদরায়ের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম হয়েছে চাঁদপুর। অন্যমতে, চাঁদপুর শহরের (কোড়ালিয়া) পুরিন্দপুর মহল্লার চাঁদ ফকিরের নাম অনুসারে এ অঞ্চলের নাম চাঁদপুর। তবে নামকরণের বিষয়ে ভিন্ন মতবাদও প্রচলিত আছে। ব্রিটিশ আমলে প্রশাসনিক পূর্ণবিন্যাসের ফলে ১৮৭৮ সালে প্রথম চাঁদপুর মহকুমার সৃষ্টি হয়। ১৮৯৬ সালের ১ অক্টোবর চাঁদপুর শহরকে পৌরসভা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। ১৯৬০ খ্রি. পর্যন্ত জেলার নাম ছিল ত্রিপুরা জেলা। তখন এ জেলা ৪টি মহকুমা নিয়ে গঠিত ছিল। তা হলো: সদর উত্তর, সদর দক্ষিণ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও চাঁদপুর। ১৯৮৪ সালে ১৫ ফেব্রুয়ারি চাঁদপুর জেলা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। বর্তমানে চাঁদপুর জেলা ০৮টি উপজেলা নিয়ে গঠিত যথা: চাঁদপুর সদর, হাজীগঞ্জ, শাহরাস্তি, হাইমচর, ফরিদগঞ্জ, কচুয়া, মতলব উত্তর ও মতলব দক্ষিণ এবং এর সংসদীয় আসন ০৫টি। মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ২৮ মার্চ থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত চাঁদপুর শত্রু মুক্ত হতে থাকে। ৭ এপ্রিল সকাল ৯টায় পাক হানাদার বাহিনী প্রথম চাঁদপুরের পুরাণবাজারে বিমান হামলা চালায়। চাঁদপুরের বেশ কয়েকটি স্থানে মুক্তিযোদ্ধাদের সাথে পাক হানাদার বাহিনীর সম্মুখ যুদ্ধ হয়। ১৯৭১ সালের ৮ ডিসেম্বর দিবাগত রাত ১০টায় চাঁদপুর সম্পূর্ণরূপে শত্রু মুক্ত হয়। ১৯৮৪ সালে চাঁদপুর মহকুমা থেকে জেলায় উন্নীত হয়। বর্তমানে চাঁদপুর জেলা ব্র্যান্ডিং উদ্যোগ বাস্তবায়নকারী বাংলাদেশের প্রথম জেলা। চাঁদপুর এখন ইলিশের বাড়ি চাঁদপুর - ইলিশের শহর নামে পরিচিত।

 

চাঁদপুর বিচার বিভাগের পদযাত্রার ইতিহাস:

জেলা জজ আদালতঃ 

চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৮৪ সালের ০১ সেপ্টেম্বর। এর পূর্বে চাঁদপুর জেলার বিচার কাজ পরিচালিত হতো কুমিল্লা জেলার একটি মহকুমা হিসেবে। তৎকালীন সময়ে চাঁদপুর জেলার বিচারপ্রার্থী জনগণের আইনি অধিকার প্রতিষ্ঠার জন‌্য  ১ টি সাব-জজ আদলত ২ টি মুন্সেফ আদালত ছিল।পরবর্তীতে ১৯৮৪ সালে চাঁদপুর  সদরে নতুন জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবন স্থানান্তর করা হয়। চাঁদপুর জেলার প্রথম জেলা ও দায়রা জজ ছিলেন জনাব আবদুল কুদ্দুস। এছাড়া, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের প্রথম বিচারক ছিলেন জনাব রমনী রঞ্জন চাকমা।

চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত:

বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ এর মাধ্যমে ২০০৭ সালে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের যাত্রা শুরু হয়। চাঁদপুর জেলার  প্রথম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ছিলেন জনাব সালেহ উদ্দিন আহমেদ। চাঁদপুর জেলায় এখনও চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন নির্মিত হয়নি ।

চাঁদপুর বিচার বিভাগে বিদ‌্যমান আদালতসমূহ:

চাঁদপুর বিচার বিভাগে বর্তমানে সর্বমোট ২২ টি আদালত এর কার্যক্রম চালু আছে, যথাক্রমে : ১ টি জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ২ টি অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ২ টি যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালত, ৬ টি সিনিয়র সহকারী জজ আদালত , ২ টি সহকারী জজ আদালত এবং ১ টি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ১ টি অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৩ টি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, ৪ টি জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ।

পাশাপাশি, ১ টি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল এবং ১টি ল্যান্ড  সার্ভে ট্রাইব্যুনাল  এর কার্যক্রম চালু রয়েছে। এছাড়াও সাধারণ অসহায় বিচারপ্রার্থীর আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করতে কাজ করছে চাঁদপুর জেলার আদালত ভবনে অবস্থিত জেলা লিগ্যাল এইড অফিস।

চাঁদপুর আইনজীবী সমিতি:

চাঁদপুর বিচার বিভাগের অবিচ্ছেদ্য অংশ চাঁদপুর বার। চাঁদপুর বার একটি ঐতিহ্যবাহী এবং সম্বৃদ্ধশালী বার। চাঁদপুর বিচার বিভাগে বার এবং বেঞ্চের মধ্যে সুসম্পর্ক বিদ্যমান। চাঁদপুর আইনজীবী সমিতির প্রতিষ্ঠা কাল ১৮৮৭ এবং এর বর্তমান সদস্য সংখ্যা ৩৫০ এর অধিক। আইনজীবী সমিতির বর্তমান সভাপতি এ টি এম মোস্তাফা কামাল এবং সেক্রেটারী এ জেড এম রফিকুল হাসান রিপন।

চাঁদপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বৃত্তান্তঃ

চাঁদপুর বিচার বিভাগের বিচারিক কার্যক্রম বর্তমানে দ্বিতল দালানে পরিচালিত হয়ে আসছে। এ জেলায় বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছেন বিজ্ঞ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ জনাব মোঃ মহসিনুল হক জনাব মোঃ মহসিনুল হক বিগত ২০২৩ সনের ২৬ এপ্রিল চাঁদপুর জেলায়  ১৯তম জেলা ও দায়রা জজ হিসাবে যোগদান করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই চাঁদপুর বিচার বিভাগ দেশের জনগনের ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায় বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করেছে। এই জেলায় দায়িত্ব পালন করে স্বাধীন বাংলাদেশের সুপ্রীম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিচারপতি জনাব আবদুল কুদ্দুস, জনাব আসাদুজ্জামান রহমান ফারুক, জনাব জামসেদুর রহমান, জনাব ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া, জনাব নাজমুন আরা সুলতানা, জনাব আনোয়ারুল হক, জনাব সহিদুল করিম এবং জনাব কামরুল হোসেন মোল্লা। বর্তমান জেলা ও দায়রা জজ মহোদয়ের দক্ষ এবং সুনিপুণ নির্দেশনায় এই জেলায় কর্মরত বিচারকগণ দেশ প্রেমে উদ্ভুদ্ধ হয়ে কর্ম নিষ্ঠার সাথে দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির লক্ষ্যে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।

সূত্র:

v   ১।   উইকিপিডিয়া

v  ২।   বারের প্রবীণ আইনজীবী

v  ৩।   আদালতের প্রবীণ কর্মচারী 

      সংকলক:                                                                                                                                                                            নুসরাত জাহান জিনিয়া